লালমনিরহাটের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় ফুটেছে দৃষ্টিনন্দন ফুল বাগান বিলাস। টিনের ঘরের ছাউনির ঠিক মাঝখানে ফুটেছে লাল রঙের বিলাসী ফুল। সড়ক থেকে ফুলের দিকে তাকালে মনে হয় হাতছানি দিয়ে ডাকছে তার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য।
লালমনিরহাটের গোশালা রোড ও ফায়ার সার্ভিস রোডে বসতবাড়িতে বাগান বিলাস ফুলের দেখা মিলেছে। বর্তমানে গাছগুলোতে ফুটেছে দৃষ্টিনন্দন ফুল। যাতায়াতের সড়ক থেকে মনে হয়, চিত্র শিল্পীর আকা কোনো চিত্রকর্ম। ফুলটি দেখতে অনেকটা কৃত্রিম কাগজের ফুলের মতো হওয়ায়, একে অনেকেই কাগজ ফুল বলে ডাকেন। তবে বাগান বিলাস ফুলের বিলাসী রূপ ও সৌন্দর্য দেখে প্রকৃতিবিদরা একে অর্নামেন্টাল প্ল্যান্ট বা শোভাবধর্ক উদ্ভিদ বলেন।
ফুটন্ত বাগান বিলাস ফুলের রূপের সৌন্দর্য দেখে যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যায়। বাগান বিলাসের ফুল সারা বছর ফুটলেও গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত ঋতুতে সবচেয়ে বেশি ফুটে। ফুলটি যখন তার বিলাসী রূপের সৌন্দর্য প্রকাশ করে, তখন গাছে ফুল ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। এই ফুলের বিভিন্ন রূপের ফুল দেখা যায়। তবে আমাদের দেশে সাদা, লাল, হলুদ ও গোলাপি রঙের বাগান বিলাস ফুল দেখা যায়। ফুলটির ফুলের সৌন্দর্য দেখে অনেকেই বসতবাড়ি, বাগানবাড়ি, গেষ্ট হাউজ ও বারান্দায় রোপণ করেন। ফুলটির সৌন্দর্য থাকলেও কোন সুগন্ধি নেই। দ্রুত বর্ধনশীল এই ফুলটি উচ্চতায় প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ ফুট পযর্ন্ত হয়। বেশি লম্বা হলে অনেকেই কাটিং করে ছোট করে রাখেন। বসতবাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বাগান বিলাস একটি আদর্শ ফুল। এই ফুলের গাছ থেকে কাটিং নিয়ে যে কেউ চারা রোপণ করতে পারেন।
বিভিন্ন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী চার থেকে আঠারো প্রজাতির বাগানবিলাস গোত্রের কথা উল্লেখ্য করেছেন। এ সকল প্রজাতিগুলোর সকলেই চার ঘণ্টা পরিবার হিসেবে খ্যাত নাইক্টেগিনাসিয়া গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। লতা, গুল্ম অথবা ছোট আকারের গাছ হিসেবে এটি পরিচিত। অনেকগুলো প্রজাতিই কন্টকময়। একমাত্র কাঠজাতীয় লতা প্রকৃতির বাগানবিলাস সকলের মনোযোগ আকর্ষণসহ বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
জানুয়ারি-মার্চ হচ্ছে ফুল ধরার প্রধান সময়। কিন্তু কোনো কোনো জাতের গাছে প্রায় সারা বছরই অল্পসংখ্যক ফুল দেখা যায়। ফুলগুলোর একটা থেকে আরেকটার দূরত্ব থাকে খুব কম। ফলে ফুল ফুটলে মনে হয় পুরো গাছ যেন ফুলে ফুলে ছেয়ে রয়েছে। এগুলো কাগজের মত পাতলা হয় বলে এই গাছের অপর নাম কাগজ ফুল বা কাগজি ফুল। ফল সরু, ৫ লতি যুক্ত ও একটিমাত্র বীজ সম্বলিত। কীট-পতঙ্গমুক্ত গাছ হিসেবে বাগানবিলাসের পরিচিতি রয়েছে।
পথচারী মোছাঃ আইরিন বেগম বলেন, রঙিন ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে বাড়ি, যা দেখতে ভালোই লাগে। সবুজ গাছ আর গোলাপী ফুলে ছেয়ে পুরো বাড়ির রূপই বদলে গেছে। সেই সঙ্গে রাস্তার সৌন্দর্যের বৃদ্ধি পেয়েছে।